‘হিজাব’ নয় স্কুলড্রেস না পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানো হয় : তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০২২

‘হিজাব’ নয় স্কুলড্রেস না পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানো হয় : তদন্ত কমিটি

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)


সুরমা মেইল ডেস্ক :
‘হিজাব’ নয় স্কুলড্রেস বা ইউনিফর্ম (নির্ধারিত পোশাক) না পরায় নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থীকে প্রহার করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

সোমবার (১২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে তদন্ত কমিটির প্রধান মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেকসহ অন্য সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে চার পৃষ্ঠার  প্রতিবেদন জমা দেন।

 

বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কয়েকজন শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ‘গুজব ছড়িয়ে’ শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের উসকে দেন— তদন্তে এ বিষয়েও প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্তে ‘হিজাব পরায়’ শিক্ষার্থীদের প্রহারের অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। তদন্তে দেখা গেছে, ইউনিফর্মের (নির্ধারিত পোশাক) কারণেই গত ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল ও শরীরচর্চার শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের প্রহার করেন।

 

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে ফাঁসানোর জন্য ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া গত ৭ এপ্রিল বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন ব্যক্তি হামলা চালান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, দুজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রহার করেন। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করেন। এ ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হয়েছে। শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রহার করায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

তদন্ত কমিটি ‘গুজব’ ছড়ানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে পেরেছে কি না এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গেছে। তবে এ মুহূর্তে নাম বলা যাচ্ছে না। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে সবাই জানতে পারবেন।

 

প্রভাবমুক্ত হয়ে তদন্ত করতে পেরেছেন— দাবি করে কমিটির প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী সবাইকে আমরা ডেকেছিলাম। সব কিছু শুনে এবং তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করেছি।

 

‘হিজাব পরায়’ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে বলে গত বুধবার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার জেরে স্থানীয়দের অনেকে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি স্কুলে ভাঙচুর চালান। ঘটনা তদন্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com